ওয়ার্ক-লাইফ এ ব্যালেন্স অর্জনের জন্য কিছু আবশ্যক টিপস
আমাদের বেশিরভাগের জন্য, “ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স ” একটি অযৌক্তিক কথা বলে মনে হয়। আমরা একাধিক কাজের প্রজেক্ট পরিচালনা করতে, বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখতে এবং পার্সোনাল ইন্টারেস্ট অনুসরণ করতে ক্রমাগত বিপরীত পথে চলছি। এটি ব্যালেন্স করা নয় এবং সন্তোষজনক ও নয়।
স্ট্রেস আমাদের প্রফেশনাল এবং পার্সোনাল উভয় লাইফকেই ক্ষতি করে, এই কমপ্লেক্স ওয়েব টি মানুষ খুব সহজেই ভুলে যায়। প্রকৃতপক্ষে, স্ট্যানফোর্ডের গবেষণায় দেখা গেছে যে এক সপ্তাহে ৫০-ঘন্টা কাজ করলে প্রোডাক্টিভিটি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। এই সাপেক্ষে আরও বলা যায়, একটি ওয়ার্ক উইক এ কাজের সীম যদি ৫৫ ঘন্টা অতিক্রম করে তবে তা ইন্ডিকেট করে স্বল্প প্রোডাক্টিভিটি অর্থাৎ বলা যায় ৫৫ ঘন্টা উপর কাজ করার কোনও মানে ছিল না। স্ট্রেস আমাদের কনসেনট্রেট করার ক্ষমতা নষ্ট করে দেয় এবং আমাদের বিরক্ত করে তোলে বা চরম ক্ষেত্রে হতাশায় ফেলে দেয়।
আমাদের সম্পর্কের বাইরে ওয়ার্ক/লাইফ ব্যালেন্স আমাদের স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। স্ট্রেস আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়, বিভিন্ন রোগের জন্য আমাদের আরও সংবেদনশীল করে তোলে। গবেষণা দেখায় যে দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দ্বিগুণ করতে পারে। যা হতাশাজনক!
অবশ্যই আমাদের সবার নিজেদের বৃদ্ধির চেষ্টা করার জন্য কিছুটা স্ট্রেস প্রয়োজন, ৯ টা থেকে ৫ টা ভাল পারফর্ম বা বেশি পরিশ্রম এর জন্য বেটার সময়, তবে মূল হলো ব্যালেন্স করা।
এই পোস্টে, আমরা স্ট্রেস ব্যালেন্স এবং আরও ভাল ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স করার জন্য কয়েকটি প্রাকটিক্যাল স্টেপ নিয়ে আলোচনা করব।
কাজের ক্ষেত্রে
- স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। প্রতিদিন কিছু অর্জন আমাদের সাফল্য এবং জীবন নিয়ন্ত্রণের ধারণা অর্জন করতে সাহায্য করে। স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করলে তা আপনার লক্ষ্য এন্ড অবজেক্টিভ এ স্ট্রাকচার এবং একাউন্টেবিলিটি আনতে সাহায্য করবে । অনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য গুলো পরিবর্তে, স্মার্ট লক্ষ্য গুলি সহজ ধারাবাহিকতার সাথে একটি নির্দিষ্ট রেজুলেশন এ পরিণত হয়। স্মার্ট এর অর্থ:
- স্পেসিফিক
- মিজারেবল
- এচিভেবল
- রিলেভেন্ট
- টাইম বাউন্ড
- একটি সময়ে একটি স্টেপ গ্রহণ করুন। আমাদের জীবনে ইমব্যালান্স হয় কারণ বিভিন্ন ধরণের কাজ আমাদেরকে বিভিন্ন দিকে ধাবিত করে। দক্ষতার সাথে প্রোডাক্টিভিটি লেভেল এ ফোকাস করতে, নিজেকে দুর্বল মনে করা গ্রহণযোগ্য উত্তর নয়। পরের বার আপনি বড় প্রকল্প কে মাল্টিপল স্টেপ এ ভাগ করার চেষ্টা করুন। পরের কাজটি ধরার পূর্বে আগের কাজটি সম্পূর্ণভাবে শেষ করুন এবং কাজের ফাঁকে ছোট বিরতি নিন।
- আরও বেশি ফ্লেক্সিবল আওয়ার নিয়ে ভাবুন। কেবল কাজের জন্য আমাদের ঘুমের মূল্যবান ঘন্টা এবং অনেক মূল্যবান সময় ব্যয় হচ্ছে। ডাব্লুএফএইচ নীতি হোক বা দেরি করেই শুরু হোক না কোনো, অনেক কোম্পানিগুলো ওয়ার্কিং আওয়ার এর কষ্টগুলো বুজতে পারছে এবং আরও ফ্লেক্সিবল আওয়ার বাস্তবায়ন করছে। গবেষণা দেখায়, যে এমপ্লয়াররা ফ্লেক্সিবল শিডিউল এ কাজ করে তাদের প্রোডাক্টিভিটি বেশি। আপনার এমপ্লয়ারদেরকে আরও ভাল শিডিউল পলিসি টেস্ট করতে বলুন।
- বিরতি নিন। বিরতি না থাকলে, অনেক এমপ্লয়ি একটি বিরতির জন্য অস্বস্তিকর হয়ে যেতে পারে। বিরতি অগ্রহণযোগ্য নয়; অনেক এমপ্লয়ার বিরতি নিতে এনকারেজ করে কারন বিরতি আমাদের মতিষ্ক সুস্থ রাখে এবং স্ট্রেস মোকাবেলায় আমাদের সাহায্য করে।
- সাহায্য নিন। সাহায্য চাওয়া কোনো ব্যর্থতার লক্ষণ নয়। আপনি যদি সাহায্য পান, তাহলে আপনি কাজগুলো আরও ভালো ম্যানেজ করতে পারবেন, সাহায্য না চেয়ে সাফার করলে তা আপনার কোনো উপকারেই আসবে না। যতক্ষণ আপনি সাহায্য চাইবেন না, ততক্ষণই আপনার স্ট্রেস তৈরি হবে এবং সমস্যাটি আরও বাড়তে থাকবে।
- নিজেকে উদ্দমহীন করুন। আমরা নিজেরাই নিজেদের খারাপ শত্রু হতে পারি। যতক্ষণ না আপনি নিজের বেস্ট চেষ্টা চালাতে পারছেন ততক্ষণ নিজের ভুল করার সুযোগ দেওয়া অনেক জরুরি।
কাজের বাহিরে
- ভেকেশন এ যান। ভ্যাকেশন এ যাওয়ার জন্য আপনাকে অতিরঞ্জিত কোনো দূরবর্তী স্থানে যাওয়ার দরকার নেই। এটি একটি দুর্দান্ত রিসেট বাটন এবং আপনাকে সামনের সপ্তাহ গুলোতে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু দিবে ।
- প্রতিদিন আনপ্লাগ করুন। এটি স্ল্যাক, হিপ চ্যাট, হ্যাঙ্গআউট বা অন্য কোন কর্মক্ষেত্রের যোগাযোগের জায়গা হোক না কেন, নিজের সময় দেয়া গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্ভব না যদি আপনি প্লাগইন হয়ে থাকেন এবং সহকর্মীদের সাথে সর্বদা ২৪/৭ উপলব্ধ থাকেন। আপনার নিজের জন্য ব্যক্তিগত সময় তৈরি করা দরকার।
- সকাল এবং সন্ধ্যায় রিচুয়াল ডেভেলপ করুন। একটি রিচুয়াল আপনাকে প্রিপেয়ার এবং ডি-স্ট্রেস হতে সাহায্য করবে। কাজের জন্য বা বিশ্রাম এর জন্যই হোক না কেন, প্রিপেয়ার হওয়ার জন্য কোনও প্যাটার্ন অনুসরণ করুন, আপনাকে একটি রুটিনের মধ্যে রাখুন এবং সামনের দিনের জন্য আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি করুন।
- কখন “না” বলতে হবে তা জানুন। কাজের বাইরে মজা, পরিবার এবং বন্ধুদের জন্য টাইম শিডিউল করা গুরুত্বপূর্ণ। এটিও, গুরুত্বপূর্ণ যে আপনিও তাদের সাথে এনজয় করেন। যদি আপনি দায়বদ্ধতা তিরস্কার করেন তবে এটিই স্টেপ নেয়ার সময় এবং “না” বলতে শিখুন।
- একটিভ হন। লোকেরা যখন এক্সারসাইজ এর কথা চিন্তা করে, তখন তারা ফিটনেস লক্ষ্য এবং প্রায়শই জিমের সাথে জড়িত হওয়ার ভয় নিয়ে চিন্তা করে। চিন্তা করবেন না — আমরা এখানে ইনটেন্স বুট ক্যাম্প বা এর মতন কিছু নিয়ে কথা বলছি না। লাঞ্চ এর পরে হাঁটা বা ইয়োগা ক্লাস করা আপনার মেন্টাল স্টেট এর জন্য চমৎকার হতে পারে। শারীরিক সুবিধার পাশাপাশি, রেগুলার এক্সারসাইজ স্ট্রেস, চিন্তা এন্ড ডিপ্রেশন কমাতে সাহায্য করে।
- অর্গানাইজড হন। আপনার প্রতিদিনের কাজগুলো করতে এবং জিনিসগুলো খুজতে কম সময় ব্যয় নিশ্চিত হবে, যদি আপনি অর্গানাইজড হন এবং আপনার বেশি সময় সাশ্রয় হবে অর্থাৎ, আপনি যে কাজগুলো করতে বেশি পছন্দ করেন সেগুলো এনজয় করতে আরও বেশি সময় পাবেন!